বেসরকারি খাতে নতুন করে ছয়টি ব্যাংকের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ।
নিঃসন্দেহে এটা খারাপ সংবাদ, যদিও অপ্রত্যাশিত নয়। কারণ এটা পূর্বনির্ধারিতই ছিল। ভেবেছিলাম সরকার রাজনৈতিক কারণে ব্যাংক দিতে চায় বলেই বাংলাদেশ ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ শক্ত একটা অবস্থান নেবে এবং অনুমোদিত ব্যাংকের সংখ্যা আরও কম হবে। এটা অবশ্যই কম হওয়া উচিত ছিল। দুর্ভাগ্যজনক হলো— তা ঘটেনি। সিদ্ধান্তটি রাজনৈতিক এবং অবিবেচনাপ্রসূত।
এতে পুরো ব্যাংকিং খাতের রাজনৈতিকীকরণ করা হলো। ব্যাংকের উদ্যোক্তা হিসেবে যাদের নাম শুনেছি তারা প্রত্যেকেই ক্ষমতাবান রাজনীতিবিদ। ফলে ব্যাংক দেয়ার মাধ্যমে ক্ষমতাবান অনেক রাজনীতিককে পুরস্কৃত করা হলো।
ব্যাংকের জন্য রাজনীতি নয়, দরকার আর্থিক খাতের অভিজ্ঞতা। কিন্তু যারা ব্যাংক পেলেন তারা কেউ এ খাতে দক্ষ বলে শুনিনি। নতুন এতগুলো ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের ওপর আরও চাপ তৈরি করবে। বিদ্যমান ব্যাংকগুলো দেখতেই বাংলাদেশ ব্যাংককে হিমশিম খেতে হচ্ছে। নতুন ব্যাংক হওয়ায় তাদের কাজের পরিধি আরও বাড়বে। ফলে নজরদারি করতে আরও বেশি ভুগতে হবে তাদের।
বেসরকারি খাতে এতগুলো ব্যাংক অনুমোদন পাওয়ায় ব্যাংকিং খাতে অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু হবে। দক্ষ লোকের এমনিতেই অভাব আছে, তার ওপর নতুন ব্যাংকের জন্য লোকবল দরকার হবে। এই লোক তারা কোথায় পাবে? পুরনো ব্যাংক থেকেই টানতে হবে। সবমিলিয়ে এ খাতে অস্থিরতা তৈরি হবে। বিদ্যমান ব্যাংকগুলো এখন নানা প্রস্তাব দিয়েও পর্যাপ্ত আমানত পাচ্ছে না। নতুনরা আসায় আমানত সংগ্রহে আরও টানাটানি শুরু হবে। যা হোক সর্বোচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে সর্বোচ্চসংখ্যক রাজনৈতিক ব্যাংক অনুমোদন করা হয়েছে, তারা ভালো করুক এটাই আমার প্রত্যাশা।