সম্প্রতি অষ্টম জাতীয় পে-কমিশন সিভিল সার্ভিসে (বেসামরিক প্রশাসনে) কর্মরতদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর যে প্রস্তাব করেছে, তা দেশব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। জনগণের প্রধান উদ্বেগের জায়গাটা হলো, এর ফলে না মূল্যস্ফীতির ওপর প্রভাব পড়ে? অনেকে এ ভেবেও চিন্তিত যে, তাতে উন্নয়নের মতো অগ্রাধিকারমূলক খাতগুলোর ব্যয় কমে যেতে পারে। কেউ কেউ আবার বিতর্ক তুলেছেন, এমনিতেই যেখানে বেসামরিক প্রশাসনের সেবার মান কমে গেছে, সেখানে এ বেতন বৃদ্ধির প্রস্তাব কীভাবে ন্যায্য হবে? অনেকে অভিযোগ করছেন, সিভিল সার্ভিসে কর্মরতদের রাজনৈতিকভাবে নিজেদের পক্ষে রাখার জন্যই সরকার বেতন বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, ইস্যুটি নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি এবং উদ্বেগের কারণ বিচিত্র ও পরিসরে বিস্তৃত।
আমার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি হলো, বেসামরিক প্রশাসনে কর্মরতদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির প্রস্তাবটি বেসামরিক প্রশাসনের প্রত্যাশিত ক্রিয়াকলাপের আলোকে যৌক্তিক এবং ন্যায্য। কারণ বিদ্যমান বেতন-কাঠামো বেসামরিক প্রশাসনে কর্মরতদের ওপর ন্যস্ত দায়িত্বের সমানুপাতিক নয়। আরো আগেই এ ভুল শোধরানো দরকার ছিল। ফলে অষ্টম পে-কমিশনের সুপারিশ সঠিক পথেই রয়েছে।
তথাপি অষ্টম পে-কমিশনের সুপারিশগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তোলার সুযোগ রয়ে গেছে। তাই সরকারকে অষ্টম পে-কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে এসব প্রশ্নের দিকে নজর দিতে হবে।
অষ্টম পে-কমিশনের সুপারিশ তিনটি আন্তঃসম্পর্কযুক্ত প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। প্রথমত. বেসামরিক প্রশাসনের মান, দক্ষতা এবং কার্যকারিতার মতো বিষয়গুলো প্রধান উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ। ফলে বিষয়টি নিয়ে জনগণের মধ্যে যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে, তা যথাযথ। তথাপি বেতন-ভাতার ইস্যুটি বেসামরিক প্রশাসনের শুধু এক দিক। বেসামরিক প্রশাসনের আরো অনেক বিষয় আছে, সেসব নিয়েও আলোচনার প্রয়োজন আছে।
দ্বিতীয়ত. যদি সরকারি আয়-ব্যয়ের হিসাব নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই হয়, তাহলে শুধু বেসামরিক প্রশাসনের বেতন-ভাতা বাবদ ব্যয় নিয়ে কেন, সরকারের সব আয়-ব্যয়ের হিসাব-নিকাশ নিয়েই প্রশ্ন তোলা যেতে পারে।
তৃতীয়ত. বেসামরিক প্রশাসনের বেতন-ভাতা বাড়ার ফলে বাজেটের ওপর কী প্রভাব পড়বে এবং কীভাবে এ অতিরিক্ত খরচ মেটানো সম্ভব হবে, এসব বিষয় নিয়ে অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে।
সেবার গুণগত মান: বেসামরিক প্রশাসনের গুণগত মান, দক্ষতা এবং কার্যকারিতা বড় সমস্যা। সেবার নিম্ন মান এবং মেধার বদলে ক্ষমতাসীন সরকারের প্রতি আনুগত্যের ভিত্তিতে পদোন্নতি এবং পোস্টিংয়ের রাজনীতিকীকরণের ফলে বেসামরিক প্রশাসনের মান কমে যাচ্ছে বলে অনেকে মনে করেন। এছাড়া নতুন সৃষ্ট পদমর্যাদার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক বিভাগের কোনো প্রাসঙ্গিকতা নেই বলেও অভিযোগ উঠেছে।
আরেকটি ইস্যু, বেসামরিক প্রশাসনের আকার, বিশেষত নিচের দিককার। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতার ভিত্তিতে নিয়োগের ফলে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ।
বেসামরিক প্রশাসন-সংক্রান্ত উল্লিখিত সব ইস্যুতেই বিভিন্ন রূপে জনগণের উদ্বেগ প্রকাশ হয়েছে। এসব ব্যাপারে হয়তো কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ নেই। তথাপি যথাযথ তথ্য-উপাত্ত ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে এ ইস্যুগুলো পর্যালোচনা করে দেখার প্রয়োজন আছে। এ লক্ষ্যে বেসামরিক প্রশাসন রিফর্ম কমিশন হিসেবে একটি দক্ষ গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে এবং তার সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে বেসামরিক প্রশাসনের সংস্কার করা যেতে পারে। এর লক্ষ্য হবে কীভাবে সরকার জনসাধারণকে আরো ভালো সেবা দিতে পারে। ভালো সেবা পেলে বেতন-ভাতা বাড়ানো নিয়ে বিতর্কের সুযোগ অনেক কমে যাবে।
সরকারি ব্যয়ের সংস্কার: বেসামরিক প্রশাসনে কর্মরতদের বেতন-ভাতা বাবদ ব্যয় সরকারি ব্যয়ের একটি প্রধান উপাদান। কিন্তু এছাড়া সরকারি ব্যয়ের আরো অনেক ক্ষেত্র রয়েছে, যেগুলোয়ও সংস্কার আনা জরুরি। এর দুটি উদাহরণ, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর লোকসান পুষিয়ে উঠতে এবং রাষ্ট্রায়ত্ত মালিকানাধীন বাণিজ্যিক উদ্যোগগুলোর ঘাটতি মেটাতে সরকারি তহবিল থেকে অর্থায়ন।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো অনেক দিন ধরেই বিশাল পরিমাণ খেলাপি ঋণের (এনপিএল) ঘানি টানছে। ২০০৪ সালে এক্ষেত্রে বেশকিছু সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নের পর কিছুটা স্বস্তি আসে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে করপোরেশনে রূপান্তর এবং ব্যক্তিমালিকানাধীন খাতে ছেড়ে দেয়ার কৌশলের ভিত্তিতে ওই সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু ওই কর্মসূচি ঠিকমতো বাস্তবায়ন না করায় ২০১২ সাল থেকে পুনরায় খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়তে থাকে। এমনকি সরকারি ব্যাংকগুলোয় ব্যাপক হারে অর্থ আত্মসাত্ ও দুর্নীতির ঘটনা ঘটে (সোনালী ব্যাংকের হল-মার্ক কেলেঙ্কারি এবং বেসিক ব্যাংকের ধারাবাহিক অর্থ আত্মসাত্ কেলেঙ্কারি)। ফলে ওই ব্যাংকগুলোর মূলধনের ভিত্তিমূলে বিশাল ঘাটতি দেখা দেয়।
সরকার বর্তমানে ওই ব্যাংকগুলোর মূলধনের ঘাটতি মেটাতে বাজেট ট্রান্সফারের মাধ্যমে অর্থায়ন করছে। কিন্তু ধনী ও প্রভাবশালীদের চুরি বা অর্থ আত্মসাতের কারণে সৃষ্ট রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি মেটাতে করদাতাদের অর্থ থেকে রাষ্ট্রীয় অর্থায়ন পুরোপুরি অনৈতিক। এর তুলনায় কর অর্থ বেসামরিক প্রশাসন ব্যয় মেটাতে ব্যবহার করা অনেক ভালো।
অর্থ আত্মসাত্ বা চুরি ছাড়াও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর বেশির ভাগ ঋণখেলাপির ঘটনা ঘটে ভুল ঋণ প্রদান সিদ্ধান্ত এবং ধনী ও ক্ষমতাবানদের সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণ পরিশোধ না করার কারণে। ব্যাংকিং একটি লাভজনক ব্যবসা। সুতরাং রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো বাণিজ্যিকভাবে পরিচালিত না হওয়ার এবং সরকারি ব্যাংকগুলোর ম্যানেজারদের তাদের কার্য সম্পাদনে ব্যর্থতার জন্য জবাবদিহিতার মুখোমুখি না করার যৌক্তিক কারণ নেই।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক উদ্যোগগুলোর বেশির ভাগই বহুদিন ধরে লোকসানের মুখে আছে। প্রতি বছর জাতীয় বাজেট থেকে ভর্তুকি অর্থায়নের মাধ্যমে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ঘাটতি মেটানো হয়। কিন্তু চিরকালই কি এ দশা অব্যাহত থাকবে?
সরকারের উচিত রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক উদ্যোগগুলোর বাজেটের লাগাম টেনে ধরা। বাংলাদেশের সীমিত সরকারি সম্পদের একটি বড় অংশ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক উদ্যোগগুলোয় বিনিয়োগ হয়ে রয়েছে। সরকারের উচিত ওই প্রতিষ্ঠানগুলোয় মুনাফা এবং মালিক হিসেবে ইকুইটি শেয়ারের ওপর ইতিবাচক রিটার্ন অর্জনের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা। এ রিটার্নের টাকা দিয়ে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ সমাজসেবামূলক খাতে সরকারের ব্যয় বাড়ানো যেতে পারে।
এ দুটি উদাহরণ থেকে সরকারি ব্যয়ের খাতগুলোর সতর্ক পর্যালোচনার প্রয়োজনীয়তা পরিষ্কার হয়ে যায়। এ ধরনের পর্যালোচনার মাধ্যমে সরকার তার ব্যয়ের মান বাড়াতে পারে এবং অপচয় কমিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যয়ের দিকে লক্ষ রাখতে পারে। বিশেষত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক উদ্যোগগুলোর সংস্কার সাধনে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে।
বেতন-ভাতা বৃদ্ধিতে অর্থায়ন: সরকার যদি অষ্টম জাতীয় পে-কমিশনের সুপারিশগুলো পুরোপুরি গ্রহণ করে এবং আগামী অর্থবছরের শুরু থেকেই (জুলাই, ২০১৫) তা কার্যকর করে, তাহলে বেসামরিক প্রশাসনে কর্মরতদের বেতন-ভাতা বাবদ বার্ষিক সরকারি ব্যয় ৩১২ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৫১১ কোটি টাকায় উন্নীত হবে।
বর্তমানে বেসামরিক প্রশাসনে কর্মরতদের বেতন-ভাতা বাবদ জিডিপির ২ দশমিক ৩ শতাংশ খরচ হয়। কিন্তু অষ্টম পে কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হলে জিডিপির আরো ১ দশমিক ১ শতাংশ এ বাবদ বরাদ্দ দিতে হবে। ফলে আগামী বছর থেকে বেসামরিক প্রশাসনে কর্মরতদের বেতন-ভাতা বাবদ ব্যয় দাঁড়াবে মোট জিডিপির ৩ দশমিক ৪ শতাংশ।
এক বছরের মধ্যে মাত্র একটি সরকারি খাতে জিডিপির ১ দশমিক ১ শতাংশ সমপরিমাণ ব্যয় বৃদ্ধি তুলনামূলকভাবে বিশাল। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো, এ বিশাল ব্যয় বৃদ্ধির অর্থায়ন করা হবে কীভাবে?
যেহেতু জাতীয় বাজেটের একটি স্থায়ী কাঠামোগত রূপান্তরের মাধ্যমে এ ব্যয় বৃদ্ধি ঘটবে, সুতরাং স্থায়ী কোনো উপায়েই এর জন্য অর্থায়ন করতে হবে।
বর্তমানে জাতীয় বাজেটের জন্য অর্থায়নের প্রধান উত্স হলো, বিভিন্ন ধরনের কর থেকে প্রাপ্ত আয়। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে জিডিপির ১১ শতাংশ এসেছে কর থেকে প্রাপ্ত আয়। ২০০৯-১০ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ৯ দশমিক ১ শতাংশ। জিডিপির ২ শতাংশ কর আয় বাড়া সত্ত্ব্বেও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে কর থেকে আয়ের অবদান অনেকের চেয়ে কম। এর বড় একটি কারণ বাংলাদেশের ব্যক্তিগত আয়করের অবদান মাত্র জিডিপির ১ শতাংশের মতো।
এর বিপরীতে ২০১০ সালে পরিচালিত গৃহস্থালি আয়-ব্যয়-সংক্রান্ত এক জরিপে দেখা গেছে, জাতীয় আয়ের ৩৫ শতাংশই দেশের শীর্ষ ১০ শতাংশ গৃহস্থালির হাতে পুঁজিত হয়। এ শীর্ষ আয়কারী গোষ্ঠী যদি ন্যূনতম ১৫ শতাংশ (সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশের তুলনায়) হারেও আয়কর দেয়, তাহলেও ব্যক্তিগত আয়করের অবদান দাঁড়াবে জিডিপির ৫ শতাংশে। ব্যক্তিগত আয়কর আদায়ে এ ব্যর্থতা আমাদের আয়কর পদ্ধতিতে মারাত্মক কাঠামোগত ত্রুটি রয়েছে বলেই উল্লেখ করে।
রাজস্ব আদায় পদ্ধতির ত্রুটিগুলো দূর করতে পারলে বেসামরিক প্রশাসনে কর্মরতদের বেতন-ভাতা বাবদ অতিরিক্ত ব্যয় মেটানোর জন্য যথেষ্ট রাজস্ব আয় হবে। এছাড়া সামাজিক সেবা এবং অবকাঠামোর উন্নয়নমূলক ব্যয়ও বাড়ানো সম্ভব হবে।
বেসামরিক প্রশাসনে কর্মরতদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির ফলে সবচেয়ে বড় ঝুঁকির কারণ হতে পারে— এ বাবদ অতিরিক্ত ব্যয় নির্বাহের জন্য বাজেট ঘাটতি পূরণ করতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকারকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ঋণ করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিতে পারে। যার ফলে উচ্চ মূল্যস্ফীতি দেখা দিতে পারে। এ ঝুঁকি প্রতিরোধের জন্য সরকারকে আগে থেকে ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য কমে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের এ ব্যাপারে চিন্তামুক্ত থাকার অবকাশ নেই। বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমার ফলে যে আয় হয়েছে, সেটা স্থায়ী উত্স হতে পারে না। কারণ ১২-১৮ মাসের মধ্যেই আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য আবারো বেড়ে যেতে পারে।
তার চেয়ে বরং অনগ্রাধিকারযোগ্য খাতে সরকারি ব্যয় কমানো এবং ব্যক্তিগত আয়কর বাড়ানোর মাধ্যমেই সরকার মূল্যস্ফীতির ঝুঁকি বা অগ্রাধিকার পাওয়ার যোগ্য খাতের ব্যয়সংকোচন ব্যতীত বেসামরিক প্রশাসনের বেতন-ভাতা বাবদ অতিরিক্ত ব্যয় নির্বাহে সক্ষম হবে।
আরেকটি বিকল্প পথ হলো, অন্তত দুই বছর সময় হাতে নিয়ে ধাপে ধাপে বেতন বৃদ্ধি বাস্তবায়ন করা। পাশাপাশি রাজস্ব আয়ের উত্স বৃদ্ধি এবং অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কাটছাঁট করার পদক্ষেপগুলোও পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নের মাধ্যমে ভারসাম্য বজায় রাখা।